রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প পর্ব তিন

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা
- এই তমা তোমার নাকটা এত
ভোতা কেন?
- বিয়ের সময় দেখে করোনি?
- দেখেই তো করেছি!
- তাহলে আবার নাক নিয়ে
কথা বলছ কেন?
- সেদিন ভোতা নাকটাই তো
প্রছন্দ হয়েছিল। ভেবেছিলাম
এই ভোতা নাক ওয়ালা
মেয়রটাকে বিয়ে করে
প্রতিদিন সকালে নাকে ধরে
টানব।
- তা হিমেল সাহেব
আপনাকে টানতে মানা করল
কে?
- তমা তোমার চোঁখ দুটো না,
২টাকা দামের মার্বেলের মত
বড় বড় ।
- হিমেল কি শুরু করলে?
- আহা! শোন না।
- তোমার অহেতুক কথা
শোনলে আমার কাজ গুলো কে
করে দিবে?
- ঠিক আছে যাও বলব না।
- ঠিক আছে তাহলে আমি
গেলাম.....
- ওমা সে দেখি সত্যি সত্যিই
চলে যায়।
বলেই হিমেল তমার পিছন দিক
থেকে, পেটের মধ্যে জড়িয়ে
ধরে, হিমেলের মুখটা তমার
কানের কাছে নিয়ে বলে.....
“ সেদিন তোমার মার্বেল
চোঁখ গুলো দেখে পছন্দ
করেছিলাম কারন, আমি
ভেবেছিলাম এই মেয়েটা
আমি যখন কোন ভুল করব তখন
চোঁখ বড় করে আমাকে শাসন
করতে পারবে। তাই তোমাকে
বউ করেছিলাম।”
এবার সত্যিই তমা হিমেলের
দিকে চোঁখ বড় করে তাকিয়ে
আছে। কি বলবে ভেবে পাচ্ছে
না, কারন হিমেলকে কিছু
বলেও লাভ নেই। ওকে যতই রাগ
দেখিয়ে কথা বলব ততই
বেহায়ার মত হাসবে। ওকে
আমি কি শাসন করব?
---------------
-----------
সময় গুলোর কথা ভাবতে গিয়ে
চায়ের কাপের চা যে কখন
ঠান্ডা হয়ে গেছে তমা
বলতেই পারবে না। আজ এগুলো
তমার কাছে শুধুই স্মৃতি।
হিমেল আর আগের হিমেলটি
নেই। আজ হিমেলের কাছে
তমার জন্য একটু সময় নেই
হেসে কথা বলার, একটু সময়
নেই পাশে বসে চা খাওয়ার।
মাত্র একটা বছরের ব্যাবধানে
সব কিছু কি দ্রুতই না পাল্টে
গেল। সত্যিই সময় গুলো খুব
দ্রুতই পাল্টে যায়। সময়ের
কাছে মানুষ বড় অসহায়।
------------------------
- হিমেল খেয়ে যাবেনা?
- না ক্যান্টিনে খেয়ে নেব।
তুমি খেয়ে নিও।
- একটু তো আমার পাশে বস।
তোমাকে ছাড়া খেয়েছি
কখনও?
- দেখ তমা এমন তামাশা
গুলো আমার সাথে করতে এসো
না, আমার ভাল লাগেনা। বড়
কথা হল তোমার খাবারের
আগে যে স্বাদটা ছিল তা এখন
আর নেই।
- স্বাদ ঠিকই আছে, শুধু
তোমার সময়টা নেই। থাকবে
কি করে, পাশে সুন্দরি মেয়ে
নিয়ে সবসময় খেলে কি বাসায়
ভোতা নাকের কারো সাথে
খেতে ভাল লাগে?
- কি বলতে চাও তুমি?
- না কিছুনা, যাও তোমার
দেরি হয়ে যাচ্ছে । শুধু শুধু সময়
নষ্ট করোনা।
- তমার তোমার কি মনে হচ্ছে
না? তুমি একটু বেশি বলছ?
- কি বেশি বলেছি? তুমি
করতে পার আর আমি বলতে
গেলেই যত সমস্যা।
- তমা পরিণাম কিন্তু খুব
খারাপ হবে?
- কি খারাপ হবে? রাতে
বাসায় ফিরবে না? বারে
যাবে? তোমার যাওয়া লাগবে
না। আমিই চলে যাচ্ছি....
-------------------------
তমা আর হিমেল মুভি দেখছে।
হিমেল শুয়ে আছে আর তার
বুকে তমা শুয়ে আছে। থেকে
থেকেই তমা হিমেলের আঙ্গুল
ফুটিয়ে দিচ্ছে, চুল টেনে
দিচ্ছে। হিমেলের খুব ভাল
লাগছে। বিয়ের আগে স্বপ্ন
দেখত বউ নিয়ে এভাবে শুয়ে
শুয়ে মুভি দেখবে দুজন গল্প
করতে করতে হেটে আসবে
অজানা কোন রাজ্য থেকে।
হঠাৎ হিমেলের ইচ্ছে করল একটু
দুষ্টামি করতে।
- তমা আমার ঘড়িটা পাশের
রুমে রেখে এসেছি, নিয়ে
এসো তো।
: [কার্য সম্পাদন]
- তমা পানি খাব
:
- আচ্ছা এখন যদি মুড়ি খাওয়া
যায় তাহলে কেমন হয়? যাও
মুড়ি নিয়ে আস।
:
- তমা আমার চশমাটা নিয়ে
আস।
:
- তমা লাইটারটা দাও তো।
:
- তমা রিমোটটা নাও
:
- মোবাইলটা কোথায়
রেখেছি? নিয়ে আসতো।
:
হিমেল আর পারছে না, এবার
খুব হাসি পাচ্ছে। আর কি
বলবে? সবতো শেষ।
- আচ্ছা তমা তোমাকে
এতগুলো ফরমায়েশ দিলাম,
তোমার বিরক্ত লাগেনি?
- বিরক্ত লাগবে কেন? যেদিন
থেকে তোমাকে স্বামী বলে
মেনে নিয়েছি সেদিন থেকে
তোমার সকল কিছু নিজের বলে
মেনে নিয়েছি।
- তাই বলে??? আমি মাঝে
মাঝে অবাক হয়ে যাই তোমার
ধর্য্য দেখে। ভালবাসি তমা,
আরও ভালবাসতে ইচ্ছে করে।
কথা দিচ্ছি তমা তোমাকে
ছাড়া বাকিটা পথ, ভুল করেও
একা হাটার চেষ্টা করব না।
আপা ভাড়াটা দেন....
কন্টাক্টরের কথায় তমার
মগ্নতা কেটে যায়। খুব হাসি
পাচ্ছে তমার, যেই হিমেল
বলেছিল একা হাটবে না আজ
থেকে সে একা হাটবে।
গল্পটা এখানেই শেষ হলে
পারত। কিন্তু না হিমেল
দুইদিন যেতে না যেতেই
তমাকে ফোন করে বাসায়
ফিরে আসতে। তমাও কখনও
হিমেলের অবাধ্য হয়নি তাই
একবার বলতেই ফিরে আসতে
সম্মত হয়। মুখ দিয়ে শুধু একটা
কথাই উচ্চারন করে “তখন
ফিরালেই পারতে”।
ঘরটা তমার কাছে অন্য রকম
লাগছে। ঘরের ভিতরে ডুকেই
তমার মনে হচ্ছে ভালবাসা
ফিরে এসেছে। শোবার ঘরে
গিয়ে দেখে পুরো বিছানাটা
সাজানো ফুলে ফুলে। ঠিক
যেভাবে সাজানো ছিলো
বিয়ের প্রথম রাত্রীতে। তমার
কাছে মনে হচ্ছে আজ আবার
সেই প্রথম রাতটা ফিরে
এসেছে। ড্রেসিং টেবিলের
উপরে একটা চিরকুট “ তমা
তোমার শূণ্যতা আমি খুব করে
টের পেয়েছি। সত্যি তোমার
চোঁখ রাঙ্গানি না দেখে
আমার চলবে না। তোমার
ভোতা নাকটাতে ধরে আমি
আবার প্রতিদিন টানতে চাই।
আমি আবার সেই প্রথম রাত
থেকে শুরু করতে চাই। তমা
ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ। আর
দিন গুলোর জন্য সরি”

Share this

0 Comment to "দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প পর্ব তিন"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন